১৯৯৬ইং থেকে এখানে উচ্চাঙ্গ সংগীত , লঘু সংগীত ও তবলা বাজানো শেখানো হয় । প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক - ওস্তাদ হাফিজুর রহমান কাজল । ( রাজশাহী বেতার শিল্পী । ) ব্লগ পরিচালনায় - এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র অজ্ঞ বাউল । স্থান- পুরনো স্টেডিয়াম মার্কেট এর দ্বিতীয় তলা ।চাঁপাই ববাবগঞ্জ ।
Sunday, March 16, 2014
সংগীতের ব্যকরন
বাংলা ,ইংরেজি ব্যকরনের মত সংগীতের ও ব্যকরন রয়েছে ।সংগীতের ব্যকরন কে উপপত্তিক বলা হয় । সঙ্গীতে অনেক শব্দ ব্যবহার করা হয় এই শব্দ গুলোকে পরিভাষা বলা হয় । এই পরিভাষা না বুঝলে শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয় । ভালো গান গায়তে পারা ও সংগীত সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখা এক নয় । সংগীত সম্পর্কে ভাল ধারনা রাখতে ও সুরের গভীরে প্রবেশ করে সংগীত সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখতে হলে অবশ্যয় । পরিভাষা শব্দ প্রকরন ও ব্যকারনিক জ্ঞান থাকতে হবে ।
সংগীত জগতের পরিধী ব্যপক তবু সংক্ষেপে প্রশ্ন উত্তর এর মাধ্যমে বিষয় গুলো সহজে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে । হয়ত বা অনেক প্রশ্নের উত্তর এখানে সং যোজন করা সম্ভব হবেনা । তাই আপনাদের জানা প্রশ্ন উত্তর আমাদের সাথে সেয়ার করতে পারেন । এবং সংগীত বিষয়ক যে কোন প্রশ্ন করতে পারেন সাহায্য চাই ক্যটাগড়িতে । আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করব উত্তর দেবার । নিম্নে আমরা সংগীত বিষয়ক প্রয়জনীয় প্রশ্ন উত্তর দিয়ে দিলাম ।আশা করি আগ্রহী ও নবীন শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন ।
প্রশ্ন ১ . সংগীত কাকে বলে ? কত প্রকার কি কি ?
এক কথায় গীত , বাদ্য ও নৃত্যর সমষ্টিকে শাস্ত্রমতে সংগীত বলে । কিন্তু গীত , বাদ্য ও নৃত্য আলাদা আলাদা এক একটি কলা বা বিদ্যা ।
সংগীত সাধারণত দুই প্রকার ।
১. উচ্চাঙ্গ বা মার্গ সংগীত ।
(রাগ , খেয়াল , ধুন ইত্যাদি সংগীত কে উচ্চাঙ্গ বা মার্গ সঙ্গীত বলে ।
২. লঘু সংগীত বা দেশীও সংগীত
হালকা অঙ্গের গান আধুনিক ,পল্লিগীতি ভাটিয়ালী ইত্যাদি গান গুলো লঘু সংগীতের নামে পরিচিত ।
দৃষ্টি আকর্ষণ –ব্যান্ড , হিপহপ এই ধরনের গান গুলো আমাদের দেশীও না হলেও লঘু সংগীতের অন্তর্ভুক্ত । আমাদের দেয়া তথ্যে কারো দ্বিমত থাকলে উপযুক্ত প্রমান সহ আমাদের সাথে সেয়ার করুন । অবশ্যয় আপনার মতামতের মূল্যায়ন করব ।
প্রশ্ন ২. সংগীত শাস্ত্র কাকে বলে ? কত প্রকার কি কি ?
যে সকল গ্রন্থ পড়ে সংগীতের বিষয় সমুহে জ্ঞান লাভ করা যায় । সে সকল গ্রন্থ গুলোকে সঙ্গীত শাস্ত্র বলে ।
সঙ্গীত শাস্ত্র সাধারণত তিন প্রকারের হয়ে থাকে ।
১. গীত ধায্য (উচ্চাঙ্গ , লঘু সঙ্গীত সম্পর্কিত গ্রন্থ । )
২. বাদ্য ধায্য ( বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কিত গ্রন্থ )
৩. নিত্য ধায্য ( নিত্য সম্পর্কিত গ্রন্থ )
প্রশ্ন ৩. গীত কাকে বলে ?
বাদ্য যন্ত্র বিহীন শুধু কণ্ঠের সাহায্যে শ্রুতি মধুর ভাবে পরিবেশন করা কে গীত বলে ।
গীত নানা প্রকারের হয়ে থাকে ধ্রুপদ , খেয়াল , ঠুমরী , ভাটিয়ালী ইত্যাদি । আমাদের সংস্কৃতি জুড়ে বিয়ে সহ নানা অনুষ্ঠানে এক ধরনের গীতের প্রচলন ছিল । যা আজ বিলুপ্তির পথে .কিন্তু সে সকল কৃষ্টি কালচার গুলো আমাদের ঐতিহ্য ।
প্রশ্ন ৪. অচল স্বর কাকে বলে ?
সপ্তকের সা ও পা কে অচল স্বর বলে । কারন এই দুটি স্বরের কোন কোমল বা কড়ি স্বর নেই ।
মা এর কোমল স্বর (ক্ষ) তিব্র বা কড়ি অথবা মধ্যম নামে পরিচিত ।
সপ্তক কাকে বলে ? কত প্রকার কি কি ?
সাতটি স্বর সা রে গা মা পা ধা নি এই সাতটি স্বরের একত্রিত নাম হলো সপ্তক ।তবে শুদ্ধ স্বর ৭ টি ও কোমল স্বর ৫ টি মোট ১২ টি স্বরের সমষ্টি হলো সপ্তক । কোমল স্বর গুলো শুদ্ধ স্বরের নাম নেই কিন্তু অবস্থান নেই না ।
সপ্তক তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।
১। উদার (অনেকে মন্ত্র বলে )
২ মুদারা (অনেকে মধ্যম বলে )
৩। তারা
উদার , মুদারা ,তারা চেনার সহজ উপাই হচ্ছে । সি বা সা হতে বাম দিকের স্বর গুলোই উদার স্বর ।স্বরলিপি লেখার ক্ষেত্রে উদার স্বর গুলোর নিচে একটি হসন্ত (
্ ) যুক্ত থাকে যেমন স্ র্
মুদার – আপনার সা হতে নি পর্যন্ত মুদার স্বর । অনেক গুণীজন সহজে বোঝানোর জন্য বলে থাকে আপনার সা হতে সা পর্যন্ত মুদার স্বর ।মুদারার স্বর গুলোতে কোন চিহ্ন থাকেনা । উপরের র্স থেকে ডানের স্বর গুলো হলে তারা । তারা স্বর গুলোতে একটি রেফ ( র্স ) চিহ্ন থাকে ।
লক্ষনীয় ভারতের কোন কোন প্রদেশে রেফ ও হসন্ত চিহ্নের পরিবর্তে ০ চিহ্ন ব্যবহার করে থাকে ।
সপ্তকের শাস্ত্রীয় নাম ও রূপ ।শুদ্ধ ও কোমল স্বরের পরিচয় ।
শুদ্ধ স্বর সা এর শাস্ত্রীয় নাম হলো ষড়জ বা স্বরোজ । এর কোন কোমল রূপ হয়না ।
শুদ্ধ স্বর র এর শাস্ত্রীয় নাম হলো রেখাব বা ঋষভ । এর কোমল রূপ ঋ ।
শুদ্ধ স্বর গ এর শাস্ত্রীয় নাম হলো গান্ধার । এর কোমল রূপ জ্ঞ ।
শুদ্ধ স্বর ম এর শাস্ত্রীয় নাম হলো তিব্র বা মধ্যম । এর কোমল (কড়ি) রূপ হ্ম ।
শুদ্ধ স্বর প এর শাস্ত্রীয় নাম হলো পঞ্চম । এর কোমল রূপ নেই ।
শুদ্ধ স্বর ধ এর শাস্ত্রীয় নাম হলো ধৈবত । এর কোমল রূপ দ ।
শুদ্ধ স্বর ন এর শাস্ত্রীয় নাম হলো নিষাদ বা নিখাদ । এর কোমল রূপ ণ ।
তাহলে বোঝা গেল , শুদ্ধ স্বর ৭ টি ও কোমল স্বর ৫ টি মোট ১২ টি স্বরের সমষ্টি হলো সপ্তক । কোমল স্বর গুলো শুদ্ধ স্বরের নাম গ্রহন করে কিন্তু অবস্থান ও রূপ গ্রহন করেনা । এবং সপ্তকের সা ও পা কে অচল স্বর বলে । কারন এই দুটি স্বরের কোন কোমল বা কড়ি স্বর নেই ।
সংগীতের স্বর কয়টি ও কি কি ?
সংগীতের শুদ্ধ স্বর ৭ টি ও কোমল স্বর ৫ টি মোট ১২ টি স্বর যথা- সা রে (ঋ ) গা (জ্ঞ ) মা (হ্ম )পা ধা (দ) নি (ণ)
তবে সাধারনভাবে আমরা সংগীত সাতটি স্বর বলে থাকি ।
আরোহী ও অবরোহী কাকে বলে ?
ক্রমাশানুযায়ী স হতে নি পর্যন্ত উপর দিকে যাওয়া কে আরোহী বলে । এবং উপর থেকে নিচে নেমে আসা কে অবরোহী বলে ।
হারমোনিয়ামের অঞ্চল কাকে বলে ?
১। উদার (অনেকে মন্ত্র বলে )
২ । মুদারা (অনেকে মধ্যম বলে )
৩। তারা
উদার , মুদারা ,তারা চেনার সহজ উপাই হচ্ছে । সি বা সা হতে বাম দিকের স্বর গুলোই উদার স্বর ।স্বরলিপি লেখার ক্ষেত্রে উদার স্বর গুলোর নিচে একটি হসন্ত (
্ ) যুক্ত থাকে যেমন স্ র্
মুদার – আপনার সা হতে নি পর্যন্ত মুদার স্বর । অনেক গুণীজন সহজে বোঝানোর জন্য বলে থাকে আপনার সা হতে সা পর্যন্ত মুদার স্বর ।মুদারার স্বর গুলোতে কোন চিহ্ন থাকেনা । উপরের র্স থেকে ডানের স্বর গুলো হলে তারা । তারা স্বর গুলোতে একটি রেফ ( র্স ) চিহ্ন থাকে ।
লক্ষনীয় ভারতের কোন কোন প্রদেশে রেফ ও হসন্ত চিহ্নের পরিবর্তে ০ চিহ্ন ব্যবহার করে থাকে ।
এই উদার মুদারা , তারা এর সমষ্টি হল হারমোনিয়ামের অঞ্চল ।
সুর কাকে বলে ?
স্বরের সঙ্গে আ-কার , ই-কার যুক্ত করে গাওয়াকে সুর বলে ।
সপ্তকের ক্ষেত্রে সা এর শাস্ত্রীয় নাম হলো ষড়জ বা স্বরোজ এই সা কেউ সুর বলে ।
সুর সম্পর্কে মজার ঘটনা । আমাদের রাজশাহী চাঁপাই নবাবগঞ্জ এ সা কে সুর বলাটা হাশ্যকর মনে হলেও অন্যন্য
জেলাতে সা কে সুর বলা হয় । এ প্রসঙ্গে একটি মজার কথা মানিকগঞ্জের ফারুক ভাই আমাকে সুর ধরতে বলল । আমি তো গান ধরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম । কিন্তু উনি যখন তবলায় দুটি টোকা মাড়লেন বুঝে নিলাম উনি তারা সা ধরতে বললেন ।কিন্তু আমার মস্তিকের সবুজ সিগন্যাল পেতে দুই তিন সেকেন্ড দেড়ি হওয়াতে উনি ব্যাপারটি বুঝে নিলেন । দুজনে হাসতে লাগলাম । উনি বললেন আপনাদের অঞ্চলে সা কে সুর বলার প্রচলন নেই বললেই চলে । আসলে একটি শব্দ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম ভাব প্রকাশ করে থাকে ।
লঘু সংগীত কাকে বলে ? শাস্ত্রীয় সংগীত কাকে বলে ?
সাধারণত হালকা অঙ্গের গান আধুনিক ,পল্লিগীতি ভাটিয়ালী ইত্যাদি গান গুলো লঘু সংগীত বা দেশীও সংগীত বলা হয় ।
রাগ , খেয়াল , ধুন ইত্যাদি সংগীত কে উচ্চাঙ্গ বা মার্গ অথবা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বলে ।
নিত্য বা নাচ কাকে বলে ?
নিত্য সংগীতের একটি অংশ বিশেষ । হৃদয়ের ভাব ,তাল , লয় সহযোগে বিভিন্ন প্রকার অঙ্গ ভঙ্গী দিয়ে প্রকাশ করাকে নিত্য বা নাচ বলে । নিত্য সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে ।
বাদ্য কাকে বলে ?
আমরা জানি সংগীতের একটি বিশেষ অংশ হল বাদ্য । যদিও গীত ও বাদ্য একে অপরের পরিপুরক তবু বাদ্যর আলাদা সংজ্ঞা রয়েছে । সংগীতকে শুধু যন্ত্র দিয়ে শ্রুতিমধুর ভাবে প্রকাশ করাকে বাদ্য বা যন্ত্র সংগীত বলে ।
উপপত্তিক কাকে বলে ?
সংগীতের ব্যকরন সমুহ যেমন – রাগ ঠাট সুর তাল লয় ইত্যাদি সুষ্ঠ রুপে জানাকে উপপত্তিক বলে ।
তুক কাকে বলে ? কত প্রকার কি কি ? তুক এর জন্মদাতার নাম কি ?
তুক একটি মজার জিনিশ । আমরা সকলে তুকের সাথে পরিচিত কিন্তু তুকের পরিচয় জানিনা । গানের পদ বা কলি কে তুক বলা হয় । শাস্ত্রমতে তুক চার প্রকার ।
১। স্থায়ী
২। অন্তরা
৩। সঞ্চারী
৪। অভোগ
গানের প্রথম অংশকে স্থায়ী বা মুখ বলে । দ্বিতীয় অংশকে অন্তরা , তার পরের অংশ সঞ্চারী , সব শেষ অংশ অভোগ । ইদানীং অধিকাংশ আধুনিক গান গুলোতে সঞ্চারী থাকেনা বললেই চলে ।
সর্ব প্রথম গান চার ভাগে ভাগ করেন মিঞা তানসেন । এখানে আরও একটি মজার ব্যাপার মিঞা তানসেন এর বাল্য নাম রামতনু । অর্থাৎ মিঞা তানসেন , রামতনু একই ব্যক্তি ।
অকটেভ কাকে বলে ?
ক্রমাশানুযায়ী স হতে র্স পর্যন্ত আট (৮) টি স্বরের সমষ্টি গত নামকে অকটেভ বলে ।
শুদ্ধ রাগ কাকে বলে ?
সে সকল রাগ অন্য রাগের সংমিশ্রণে রচিত নয় সে সকল রাগ গুলোকে শুদ্ধ রাগ বলে ।
গ্রহ স্বর কাকে বলে ?
সে স্বর হতে গীত বা গান আরম্ভ হয় তাকে গ্রহ স্বর বলে ।
ন্যাস স্বর কাকে বলে ?
গায়তে গায়তে যে স্বরে কিঞ্চিৎ বিশ্রাম নেয়া হয় তাকে ন্যস স্বর বলে ।
বাদী স্বর কাকে বলে ?
রাগের প্রধান স্বর কে বাদী স্বর বলে অর্থাৎ যে স্বর রাগে বেশী ব্যবহার হয় ।
সমবাদী স্বর কাকে বলে ?
রাগের প্রধান স্বর বা বাদী স্বর এর পরেই যে স্বরটি বেশী ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রধান স্বর ই হলো সমবাদী স্বর ।
বিবাদী স্বর কাকে বলে ?
রাগের শত্রু সংখ্যা কে বিবাদী স্বর বলে ?
অনুবাদী স্বর কাকে বলে ?
রাগের প্রয়োজনীয় বাদী ও সমবাদী ছাড়া বাকি স্বর গুলি হলো অনুবাদী স্বর ।
বর্জিত স্বর কাকে বলে ?
যে স্বর মোটেও ব্যবহার করা হয়না সে স্বর কে বর্জিত স্বর বলে ।
পকড় কাকে বলে ?
রাগের সংক্ষিপ্ত স্বর কে পকড় বলে ?
মাত্রা কাকে বলে ?
তালের শুক্ষ অংশকে মাত্রা বলে ?
একক কাকে বলে ?
সময়ের পরিমাপ কে একক বলে ?
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
সুন্দর লেখা, ভালো লেগেছে, অনেক কিছু জানতে পারলাম
ReplyDeleteধন্যবাদ লেখাটি আমার ভালো লেগেছে ।তবে ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে
ReplyDeleteঅনেক কিছু জানতে পারবো ।আপনার প্রচেষ্ট সফল হোক ।শুভ কামনা রহিল ।
ভালো লাগলো। কিন্তু লাইন স্পেসিং ঠিক করা জরুরি।
ReplyDeletegood
ReplyDeleteআপনার দেওয়া এই গানের রত্নসম্ভারগুলো
ReplyDeleteআমি বিশেষ আগ্রহ সহকারে পড়লাম ৷ অনেক
অজানা জিনিষ শিখলাম ৷ ধারাবাহিকতা থাকলে
আমরা বিশেষ উপকৃত হবো ৷
onk vlo laglo
ReplyDeleteঅনেক বানান ভুল আছে, তথাপি অনেকেরই কাজে আসবে তথ্যগুলো। ধন্যবাদ।
ReplyDelete.....
ReplyDeleteখুব ভাল লাগলো আসা করি পরবর্তিতে আপনার থেকে আরও
ReplyDeleteনতুন কিছু জানতে পারবো।